শপিংবিভ্রাট এড়ানো এমন কিছু নয়

কোভিডের থাবা যতই আশঙ্কায় রাখুক না কেন, পুজোর উদযাপন থাকবেই। সাবধানতা আছে তবে পুজোর আমাজে ঘাটতি নেই কোথাও। আর পুজো মানেই শপিং। যতই শপিং হয়ে যাক না কেন পুজোর সপ্তমী-অষ্টমীতেও চলে কেনাকাটা। এখনও পুজোর ক’টা দিন বাকি, এই ক’দিনও সমানতালে পছন্দের জিনিস কেনা চলবে অনলাইন ও অফলাইনে। শপিং নিয়ে অবশ্য বিভ্রাটের শেষ নেই। লাল রঙের কুর্তিটা নেওয়ার পর বারবার মনে হয় হলুদটাই অষ্টমীতে পারফেক্ট ম্যাচ হত। কিংবা অমুক ডিজাইনের শাড়িটা নিলেই ভালো হত! অথবা এটার দাম একটু বেশিই নিল! এইরকম হাজারো বিভ্রাট চলতেই থাকে শপিং নিয়ে। হাজারো অফার! এক এক কোম্পানির এক এক রকম মার্কেটিং স্ট্রাটেজি। তার মধ্যে থেকেই আপনাকে খুঁজে নিতে হচ্ছে পছন্দের পোষাক বা জুতো বা সাজগোজের জিনিস।

প্রথমে আসা যাক অফলাইন শপিং-এ। অর্থাৎ আপনি দোকানে বা শপিং মলে গেলেন পছন্দের জিনিস কিনতে। কোন কোন বিষয়ে খেয়াল রাখবেন সেই নিয়ে টিপস দিল আমাদের এক্সপার্ট টিম। শপিং-এ গিয়ে যতটা ভিড় এড়িয়ে চলতে পারেন, ততই ভালো। শপিং-এ হাঁটাহাটি প্রচুর হয় তাই হালকা কাজের সুতির পোশাক এই সময়ে শপিংয়ের জন্য বেশি আরামদায়ক। সঙ্গে বাচ্চাদের না নেওয়াই ভালো, তবে প্রয়োজন হলে তাদের হালকা কটনের জামা পরিয়ে নিন। আর জুতোর ক্ষেত্রে হাই হিল এড়িয়ে চলুন। ফ্ল্যাট জুতো বা স্যান্ডেল শপিং-এ যাবার সময় ব্যবহার করুন।

শপিং করতে গিয়ে খেয়াল রাখুনঃ  

* শপিং-এ যাবার আগে অবশ্যই প্রয়োজনীয় জিনিসের একটি তালিকা তৈরি করুন। এতে সময় কম লাগবে।

* আপনার বাজেট সম্পর্কে ওয়াকিবহল হয়ে নিন। অর্থাৎ কার জন্য বা কোন পোশাকের জন্য কত টাকা নির্ধারিত জানা থাকলে কেনাকাটা সহজ হবে।

* পুজোর আগে মার্কেট এবং শপিং মলগুলোতে ভিড় বেশি থাকবে সেটাই স্বাভাবিক। তাই বেশি খুঁতখুঁত করা যাবে না। কম সময়ের মধ্যেই কিনে ফেলতে হবে পছন্দের  জিনিসগুলো। আবার হুট করে ট্রেন্ডি মনে হলেই কোনো কিছু কিনে ফেলাও কিন্তু ঠিক নয় এতে পরে অনুশোচনা হবে। কেনার আগে ভালো করে যাচাই করে নিন পোশাকটি, জুতোটি বা জিনিসটি আপনার বা প্রিয়জনের পার্সোনালিটির সঙ্গে যায় কিনা।

*কেনার সময়ে ভালো করে জিনিসটি পরখ করে কিনুন। রঙ, সেলাই, মান এবং দাম ভালো করে দেখে নিন।

* কেনাকাটা শেষে বিল দেবার পর, বিলের তালিকার সাথে জিনিসের সংখ্যা মিলিয়ে নিন। এতে ভুল হবার সম্ভাবনা থাকে না।

* ভুল করেও বাড়ি থেকে করে আনা তালিকার বাইরের জিনিস আগে কিনতে যাবেন না। পছন্দ হলেও সেগুলো শেষের দিকে কেনাই ভালো, এতে বাজেটে চাপ কম পড়বে।

* বিল বা রিসিট ফেলে না দিয়ে কিছুদিন রেখে দিন। হঠাৎ কোনো জিনিস বদলানোর সময় কাজে লাগবে।

অধিকাংশ মানুষই এখন অনলাইন শপিং করতে পছন্দ করেন। এর অনেকগুলো সুবিধা তো রয়েইছে। তবে এখন এত অনলাইন শপিং-এর বড় কারণ কোভিড পরিস্থিতি।

অনলাইনে শপিং করার সময় যে ব্যাপারগুলো মাথায় রাখবেনঃ

* সবসময়ে বিশ্বাসযোগ্য আর নামী ব্র্যান্ড থেকেই শপিং করা ভালো। আপনি যখন অনলাইনে শপিং করবেন, খেয়াল রাখবেন ব্র্যান্ডটি দেখে নেওয়া জরুরি। এতে কোয়ালিটি খারাপ হবার আশঙ্কা কম থাকে।

* একটা বিষয়ে অবশ্যই সতর্ক থাকুন তা হল ‘ক্লোন ব্র্যান্ড’। অর্থাৎ বড় ব্র্যান্ডের নামে নকল প্রোডাক্টও কিন্তু বিক্রি হয়। বড় ব্র্যান্ডের কাছাকাছি নাম দিয়ে কমদামে প্রোডাক্ট বিক্রি নতুন কিছু নয়। তাই দাম কম দেখে ওই ফাঁদে পা দেবেন না। অনলাইন শপিং সাইট থেকে যখন কোনও নির্দিষ্ট ব্র্যান্ডের প্রোডাক্ট কিনবেন তখন অবশ্যই সেই ব্রান্ডের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটটিও দেখে নেবেন।

* আর একটি খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা ভালো করে আগে প্রোডাক্ট-এর ব্যাপারে না পড়ে কিনবেন না। যেমন যে প্রোডাক্ট কিনছেন তার বক্সে কত পিস আছে, যদি শাড়ি কেনেন তাহলে তার সাথে ব্লাউজপিস আছে কিনা, যদি কুর্তি কেনেন তাহলে তার সাথে লোয়ার আছে কিনা, যদি মোবাইল ফোন কেনেন তাহলে তার সাথে কি কি অ্যাক্সেসরিজ দেওয়া হচ্ছে এইসব ব্যাপারে ওয়াকিবহল হয়ে তবেই কিনুন।

* প্রোডাক্টের গ্যারান্টি এবং ওয়ারান্টি দেখে নেবেন।

* দু-তিনটি সাইটে একই প্রোডাক্ট ট্যালি করে দেখে নেবেন দাম, ডিসকাউন্ট, কাস্টমার রিভিউ ইত্যাদি।

* আর একটি বিষয় হল আপনি যে প্রোডাক্ট কিনছেন, তার রিটার্ন এবং শিপমেন্ট পলিসি কীরকম সেটা অবশ্যই দেখবেন।

* রেটিং অনলাইন শপিং-এ খুব গুরুত্বপূর্ণ। কমপক্ষে যাঁদের রেটিং ৪ তাদের থেকেই জিনিস কেনাটা বুদ্ধিমানের কাজ।

* শপিং-এর একদম শেষে পেমেন্টের অনলাইন রিসিট বা রসিদ আপনার ল্যাপটপ বা মোবাইল স্ক্রিনে দেখা যায়। ওই রসিদটি অবশ্যই সেভ করে রাখুন অথবা স্ক্রিনশট নিয়েও রাখতে পারেন। এতে আপনার কাছে টাকা দেওয়ার প্রুফটি থেকে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.