পুজোর খাওয়া-দাওয়া নিয়ে সচেতন থাকুন

পুজোর আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। উৎসব মানে অনিয়ম হবেই। কোভিডের সতর্কতা আছে ঠিকই তবে এর মধ্যে কি আর থেমে থাকবে বাঙালির খাওয়া-দাওয়া। বছরের এই ক’টাদিন কেউ কোনও নিয়মের গণ্ডির ভেতর দিয়ে যাবে না সেটাই স্বাভাবিক। ঘুমোতে যেতে দেরি, ঘুম থেকে ওঠাও অনেক বেলায়। খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন আসে বড়সড়। বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়া হোক বা বাইরে ঠাকুর দেখতে যাওয়াই হোক অনিয়ম হবেই প্রতিদিনকার জীবনযাপনে।

এই ক’দিনের খাওয়া-দাওয়া ও সুস্থ থাকার বিষয়ে পরামর্শ দিলেন ডায়েটিশিয়ান মানসী চট্টোপাধ্যায়

পুজোর সময় রান্নাবান্না অনেকের বাড়িতেই হয় না। এখন যতই কোভিড থাকুক না কেন যারা বাইরে খেতে পছন্দ করেন তাদের অনেকেই বাইরে খাবেন। ভাজাভুজি, রেস্তোরাঁর খাবার বেশি খাওয়া হবেই পুজোর ক’দিন। তবে যদি তা খুব বেশি পরিমান হয়ে যায়, তাতে স্টমাকের সমস্যা হতে পারে, ওজন বেড়ে যেতে পারে। আবার ডায়াবেটিস পেশেন্টদের খাদ্যাভ্যাস একটু এদিক ওদিক হলেই কিন্তু বিপত্তি।

বাড়ির খাবারও এই সময়ে একটু বেশি রিচ হয়। ফলে পেট ব্যথা, বদ হজম সহ নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই উৎসবের মেজাজে খাওয়া-দাওয়া করুন পরিমিত এবং যতটা স্বাস্থ্যের দিকে নজর রেখে করা সম্ভব। আবার বাইরের খাবারে কিন্তু বেসিক কয়েকটা ব্যাপারে সতর্ক না থাকলে মুশকিল। ধরুন বাইরে বিরিয়ানি খাওয়া হচ্ছে। সেক্ষেত্রে পুরো প্লেট নিয়ে বসা কখনই ঠিক হবে না, আমরা কয়েক চামচ তুলে নেব। আর চেষ্টা করতে হবে স্যালাডটা মেনকোর্স আসার একটু আগে খাওয়ার এবং বিরিয়ানির সঙ্গে খাওয়া হবে রায়তা। স্ট্রমাকটা স্যালাড দিয়ে কিছুটা ফুল করে নেওয়া হল এতে পাচনতন্ত্রও অনেকটা স্বাভাবিক থাকবে।

এবার জল খেতে হবে খাওয়া-দাওয়া করার ৩০ মিনিট পর। ছোট ছোট ব্যাপারে নজর দিতে হবে। বিরিয়ানির সঙ্গে কোল্ড ড্রিংস খাওয়ার একটা প্রবণতা রয়েছে, সেটা এড়িয়ে যাওয়াই ভালো। 

অবশ্যই ঠাকুর দেখতে বেরোলে একটা জলের বোতল সঙ্গে রাখতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে, শরীর যেন কোনোমতেই ডিহাইড্রেট না হয়ে যায়।

পুজোর সময় মিষ্টি খাওয়ার ব্যাপার থাকবেই। সেক্ষেত্রে পরিমানটা যতটা কম রাখা যায় ততই ভালো। গলা শুকিয়ে গেলে একটু ডাবের জল বা লস্যি খাওয়া যেতে পারে। লস্যিতে থাকে দই থাকে, সেটা প্রোবায়োটিক। যা হজমের পক্ষে খুব ভালো।

পুজোর সময় খুব বেশি ঘোরাঘুরির ফলে গরমে প্রচুর ঘাম হয় তাই অনেক সময় ডিহাইড্রেশন হতে পারে। তাই মাঝে মাঝে একটু ইলেকট্রল বা ORS বা নুন-চিনির-লেবুর সরবত খাওয়া যেতে পারে। মনে রাখবেন শরীরের ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স ঠিক রাখাটা খুব জরুরি। আর খাওয়ার প্লেট ছোট নিতে হবে। এতে মনে হবে অনেকটাই খাওয়া হল। বাইরের খাবার বা জাঙ্ক ফুড তো অনেকটা খাওয়ার প্রয়োজন নেই।

কোভিডের সময়ে বড়রা তো সাবধান থাকবেনই। আর খুব ছোট বাচ্চারা বাড়ির খাবারই খাবে। বাইরে গেলেও বাচ্চাদের বাড়ির খাবার খাওয়াতে হবে, এমনকি জলটাও বাড়ির হলেই ভালো।

ওয়েট লস বা ওয়েট গেইন বড় ব্যাপার না। সুস্থ থাকাটা জরুরি। শরীরকে কোনোমতেই ডিহাইড্রেট হতে দেওয়া যাবেন না আর পরিমানের অতিরিক্ত খাওয়া যাবে না। অস্বাস্থ্যকর খাদ্য থেকে যতটা দূরে থাকা যায় ততই ভালো। পুজো উদযাপন করুন। পাশাপাশি নিজের সুস্থতার খেয়াল রাখুন।

পরামর্শদাতা ডায়েটিশিয়ানের পরিচিতি:
Dt. Manasi Chatterjee,
Dietitian & Certified Diabetes Educator (NDEP)
Life Member IDA, Bengal Chapter, Associated with Salvation Clinic
e-mail: manasi.chatterjee@live.com

Leave a Reply

Your email address will not be published.