আলোকবর্তিকা || কেয়া চ্যাটার্জী

সে এক রূপকথার রাজ্য। সেই রাজ্যের পাশ দিয়ে কুলকুল শব্দে বয়ে চলে এক নাম না জানা নদী। সে দেশের আকাশে জুড়ে রামধনুর ঢেউ। একটি কিশোরী হেঁটে যাচ্ছে সেই নদীর তীর ধরে। তার নুপুরের নিক্কনে ধ্বনীত হচ্ছে চরাচর। সে পৃথিবীর সব ভালো। সব রং ভালো। সব মানুষ ভালো। সে পৃথিবীতে অমিত নিজের ক্যানভাসে ইচ্ছেমতো তুলি চালায়। তার কোনো বাঁধন নেই। নেই কোনো দায়। অমিত স্মিত হাসে। তার প্রাণ ভরে যায়।

“ কি গো? অনেক বেলা হলো তো। ওঠো। কাজে যেতে দেরি হয়ে যাবে যে!” মৌসুমীর মিহি ডাকে ঘুম ভাঙে অমিতের। চোখ ডলতে ডলতে ঘড়ির দিকে তাকায়। ন’টা বাজে! অমিত তড়াক করে লাফিয়ে উঠে বসে। সাড়ে দশটায় কাজের বাড়ি যেতে হবে। মৌসুমীর আনা চাটুকু কোনরকমে গলাদ্ধ করে স্নানঘরে ছোটে। “কানাকড়ির দম নেই লাটসাহেবের মতো বেলা অবধি ঘুমুচ্ছেন বাবু।” অমিতের মা ফোড়ন কাটেন। প্রথম প্রথম কথাগুলো শুনে খুব খারাপ লাগতো মৌসুমীর। হাজার হোক নতুন বিয়ে। স্বামী নিন্দা শুনলে গায়ে ফোস্কা পড়তো। এখন আর গায়ে মাখে না এসব। মানুষটাই বা কী করবে? অভাবের সংসারে একমাত্র ছেলে ঠিকমতো রোজগার করে না। মাথায় তার আর্টিস্ট হওয়ার স্বপ্ন ঘুরে বেড়ায় দিনরাত। শাশুড়ি মায়ের প্রতি তাই এখন সহানুভূতি জাগে তার।

মুহূর্তের মধ্যে রেডি হয়ে টেবিলে হুমড়ি খেয়ে ভাত ডাল আলুভাজা মুখে চালান করে। একগাল খাবার মুখে নিয়ে মৌসুমীকে জিজ্ঞাসা করে সে খেয়েছে কিনা। মৌসুমী মাথা নাড়ে। তার মানে হ্যাঁ কি না তা বোঝার সময় থাকে না অমিতের। সে ছুটে ছুটে জোগাড় করতে থাকে কাজে বেরোনোর আগের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। মৌসুমী এক কোণে দাঁড়িয়ে থাকে। মাঝে মাঝে অমিতকে খুব দূরের একজন মনে হয় ওর। যে ছেলেটাকে পাঁচ বছর আগে দেখেছিল অমিত সেই একইরকম রয়ে গেছে। আপনভোলা, পাগলাটে। কখনো বা ভীষণ বদমেজাজি। কিন্তু ওর নামী চিত্রকর হওয়ার স্বপ্নটা অধরা থেকে গেল এখনো। মাঝে মধ্যে মনে হয় এই বিয়েটাই ওর পথের অন্তরায় হয়েছে। সংসারের চাপ না পড়লে হয়তো ও কিছু করতে পারতো। যদিও সংসারের খুঁটিনাটি সবই মৌসুমী দেখে। অমিত কিছু দেখেও দেখতে পায় না। শাশুড়ি মায়ের দিকে চেয়ে সে মত পাল্টায়। এই সংসারে সে না থাকলে এই বয়স্ক মানুষটার দুর্গতির শেষ থাকত না। এসব আকাশ পাতাল চিন্তার মাঝেই অমিত এসে দাঁড়ায় সামনে। বলে, “ আরে চলো। ট্রেনটা যে মিস হয়ে যাবে।” মৌসুমী হেসে ফেলে। আহা রে, কতো ডিসিপ্লিনড ছেলে! বারান্দায় উবু হয়ে বসে থাকা কুন্তলা দেবীকে প্রণাম করে সে বলে, “মা আসলাম।” তিনি মাথা নাড়েন। এসো।

অমিত সাইকেল বের করে দাঁড়ায় উঠোনে।  মৌসুমীকে স্টেশনে ছেড়ে সে যাবে বাবলুদার অফিসে। হাজিরা খাতায় সই করে কাজের জায়গায় যেতে হয়। এই যাত্রাপথের সময়টুকু একান্তই ওদের দুজনের সময়। সাইকেলের সামনের রডে বসে মৌসুমী। অমিত প্যাডেলে চাপ দেয়। বাড়ির সামনেই পুকুর। জংলী গন্ধে ভরপুর। মৌসুমী সেই বুনো গন্ধ পায় অমিতের লোমশ বুকে, অভিন্যস্ত চুলে,একগাল দাড়িতে। আড়চোখে তাকায় স্বামীর দিকে। সে একমনে সাইকেল চালিয়ে যাচ্ছে। পুকুর পেরিয়ে ওরা উঠে পড়ে একটা ছোট্ট কালভার্টে। এই জায়গাটা ওদের দুজনেরই খুব পছন্দের। এখান থেকে অনেক গাছপালা দেখা যায়। নিচে বয়ে চলা খালটাকে নদী মনে হয়। মৌসুমী অমিতের চুলগুলো মুঠোয় ভরে নাড়িয়ে দেয়। হেসে বলে, “চুলগুলো কাটতে পারো তো। চুল বাড়ালেই বুঝি আর্টিস্ট হয়ে যায়? ” অমিত হাসে। চলন্ত গাড়িগুলোকে সাবধানে পাশ কাটিয়ে বলে, “ হবে ম্যাডাম হবে। একদিন এই চালচুলোহীন অমিত সান্যালেরও নাম হবে। দেশ বিদেশ থেকে লোক আসবে আমার ছবি কিনতে। তখন আর তোমায় লোকাল ট্রেনে চেপে কাজে যেতে হবে না।” মৌসুমীরও এই স্বপ্নটা দেখতে খুব ভালো লাগে। সেও চায় একটা ঘরোয়া জীবন। অমিত ঘ্যাচ করে ব্রেক কষে। ট্রেনের পাশটা আরেকবার ব্যাগ হাতড়ে  নিয়ে মৌসুমী ছুটে যায় স্টেশনের দিকে।

প্রথম প্রথম শাশুড়ির আপত্তি ছিল মৌসুমীর কাজ করা নিয়ে। বিশেষত কলকাতায় গিয়ে কাজ করায় তার ঘোর আপত্তি। কিন্তু দুবেলা  তিনটে পেট চালানোর খরচ জোগাড় করা অমিতের একার পক্ষে সম্ভব নয়। ট্রেনে উঠেই পরিচিত সহযাত্রীদের দেখে একপশলা টাটকা হাওয়া বয়ে যায় মৌসুমীর মনে। এরপর থেকে পুরোটা সময় তার একার। সেখানে নেই অমিত, অমিতের দেওয়া সংসারের টানাপোড়েন, নেই ভবিষ্যতের চিন্তার ভাঁজ। এই সময়টুকুকে উপভোগ করতেও মাঝে মাঝে দ্বিধা হত ওর। স্বার্থপর মনে হত নিজেকে। আসলে মেয়েরা নিজেরটুকু বুঝে নিতে খুব দেরি করে ফেলে। যখন বোঝে তখন অনেকটা সময় পেরিয়ে ফেলে। বয়স বেড়ে যায়, বেড়ে যায় দায়িত্ব। মৌসুমীও নিজের স্বল্প সময়ের সুখের ঠিকানা খুঁজে পেয়েছে বিয়ের পাঁচ বছর পরে। ট্রেন থেকে নেমে সে হাঁটা লাগায়। কলকাতার রাস্তা যতই ঘিঞ্জি হোক মৌসুমীর জীবনে প্রেম এসেছিল এই রাস্তা ধরেই। তাই কলকাতা শহরটা তার বড় প্রিয়। তাছাড়া কী দেয়নি শহরটা তাকে। জীবিকা, খাদ্য, জীবন আর অমিত।

বাবলুর দোকানে গিয়ে সাইকেলটা কোনোমতে স্ট্যান্ডে দাঁড় করিয়েই অমিত অফিসে ঢুকল হুড়মুড়িয়ে। বাবলু কাঁচের গ্লাসে আদা দেওয়া লাল চা খেতে খেতে চশমার ফাঁক দিয়ে তাকে দেখে হাজিরা খাতাটা ঠেলে দেয়। পান চিবোতে চিবোতে ঠোঁট চেটে বলে, “পার্টি কিন্তু খুব বড়। হুটহাট মাথা গরম করে ফেল না যেন।” অমিত চুপচাপ মাথা নাড়ে। এর আগে একটা বিশ্রী কান্ড করে ফেলেছিল অমিত। একটি বাড়ির দেয়ালে ডিজাইন আঁকতে গিয়ে গৃহকর্তা আবদার করেন নীল রঙের সাথে মেরুন ম্যাচ করে নকশা আঁকতে। অমিত তাকে যতই বোঝায় রং যে এইরকম খেলবে না দেয়ালে। সে ততই নাছোড়। অমিতের মাথা তেতে উঠল। সে হল্লা না করেই গৃহকর্তাকে বলে বসল তার রুচির সাথে তাল মিলিয়ে সে কাজ করতে অপারগ। রুচির কথায় ভদ্রলোকের আত্মসম্মানে লাগল। সে কি তুমুল চিৎকার অফিসে এসে! অমিত নাকি তাকে অপমান করেছে। বাবলুদা কোনোমতে সামলেছিল সেবারে। অন্য একজন রং মিস্ত্রী দিয়ে কাজ সেরেছিল। অমিতের ছোটবেলা দেখেছে বাবলু তাই কাজে ভুল করলে বকাঝকা দিলেও বরখাস্ত করেনা। একটা আলগা মায়ার টান আছে। ছেলেটার চোখ দুটো দেখলে বড় মায়া হয়।

বাবার মৃত্যুর পর আর্ট কলেজ ছাড়তে হয়েছিল অমিতকে। হঠাৎ করেই যেন একটা বিরাট বটগাছ সরে গেল মাথার ওপর থেকে। প্রচন্ড রোদে আকাশের দিকে তাকানো যায়না। দুটো মানুষের পেট চালানোই যখন জীবনের একটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় তখন রং তুলির বিলাসিতা মধ্যবিত্তর আসেনা। অমিত কলেজ ছেড়ে আঁকার টিউশন নিল। কিন্তু তা যথেষ্ট নয়। তখন বাবলুই ছিল একমাত্র আশ্রয়। ওর রঙের ব্যবসায় অমিত আর্টিস্ট হিসেবে যোগ দিল। ঘর, রেস্তোরাঁ, অফিসের দেওয়ালে কল্পনার আঁকিবুকি। সামান্য ইটের পাঁজা হয়ে ওঠে জীবন্ত। অমিত আর অন্য চাকরি করতে গেল না। ও জানত ওর দ্বারা অন্য কোনো কাজ হবে না। দুদিন পরে নির্ঘাত ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দেবে। তবু স্বপ্নগুলো যে বড্ড বেয়ারা! তারা অমিতকে রোজ ডেকে যায় স্বপ্নে। অমিত দেখে একটা ঘর ভর্তি নানা রঙের ক্যানাভাসে। গ্যালারিতে উপচে পড়ছে লোক। অমিত সান্যালের ছবির এক্সিবিশন চলছে। চড়া দামে বিকোচ্ছে এক একটা ছবি। অমিত অস্থির হয়ে ওঠে। প্রচন্ড আনন্দ হয়। উঠে বসে চৌকির ওপর আর বুঝতে পারে এ তার বহু পরিচিত দু’কামরার ঘর।

“এই তো মৌসুমী দি চলে এসেছে?” মৌসুমীকে ঘরে ঢুকতে দেখেই বলে ওঠে একটি মেয়ে। মৌসুমী না থেমেই জিজ্ঞেস করে, “ কেন দেরি হয়ে গেল?” মেয়েটি মাথা নাড়িয়ে বলে, “একদম না। পারফেক্ট টাইমিং।” মৌসুমী পোডিয়ামের দিকে এগিয়ে যায়। ব্যাগটা মাটিতে রেখে বিবস্ত্র হতে শুরু করে। শরীরের শেষ সুতোটুকু খুলে ফেলার আগে তার মনে পড়ে যায় শাশুড়িমায়ের কথা। মানুষটা জানতে পারলে…। প্রফেসর এগিয়ে এসে মৌসুমীকে পোজ বুঝিয়ে দেয়। মৌসুমী সেই ভঙ্গিতেই শুয়ে পড়ে। নয় নয় করে আট বছর হয়ে গেল আর্ট কলেজে ন্যুড মডেলিং করছে সে। যে নিয়ে এসেছিল সে নিজেও এই কাজ করতো। পাড়ার সবাই জানতো আয়ার কাজ করতে যাচ্ছে। মৌসুমী কাজের খোঁজ করেছিল তার কাছে। প্রথমে পাত্তা দেয়নি। বেশ কদিন ঝুলোঝুলি করলে নিয়ে আসে এখানে। ক্লাসে বসিয়ে রাখে শেষ পর্যন্ত। তারপর বেরিয়ে এসে জিজ্ঞাসা করলো, “বল পারবি এই কাজ?” মৌসুমীর তখন দিন আনা দিন খাওয়া অবস্থা। কিছু না ভেবেই হ্যাঁ করে দিল। এখানেই তো প্রথম দেখা অমিতের সাথে। অমিতই তো তাকে বুঝিয়েছিল এই স্টেজে উঠে মডেলিং একটা শিল্প। এই স্থানটা একেবারেই কামগন্ধহীন। মৌসুমী তাদের শিল্পের পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করছে। এটা লজ্জার নয় বরং গর্বের। অমিত তখন ছাত্র ছিল। তারপর ক্রমে কাছাকাছি এসেছিল দুজনেই। জীবনের এতোগুলো বছর কিভাবে যেন অনায়াসে পেরিয়ে এলো ওরা।

ঘরে ঢুকে অমিতকে দেখতে না পেয়ে ছাদে গেল মৌসুমী। দেখল অমিত একটা সিগারেট ধরিয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে। এই স্বভাবটা চেনা ওর। কাছে গিয়ে বলল, “ কী হয়েছে?” অমিত মাথা নাড়ে, ‘কিছু না।’ এই এক বদভ্যাস ওর। কিছুতেই মুখ ফুটে বলবে না সমস্যার কথা। তবু জোর দেয় মৌসুমী। অমিত জানায়, “ একটা অফার এসেছে জানো তো। কয়েকজন বন্ধু মিলে একটা এক্সিবিশন করবো। একটা গ্যালারি ভাড়া করার সুযোগ পেয়েছি। কিন্তু…”

— কিন্তু কি?

— অনেক টাকা লাগবে। সেলফ স্পনসর তো। প্রায় হাজার পঁচিশ। বাবলুদা কিছু দেবে বলেছে। তবে কতটা সুরাহা হবে জানি না।

— তাহলে উপায়?

অমিত একটা শীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিচে নেমে যায়। মৌসুমী আকাশের গ্যালারির দিকে চেয়ে থাকে। ঝকঝকে একরাশ নক্ষত্র।

ক্লাসের মাঝে শুভেন্দু দৌড়ে এলো, “মৌসুমীদি তোমার পলিসির রসিদটা।” মৌসুমী হাসি মুখে কাগজটা ব্যাগে চালান করে। ছেলেটা আর্ট কলেজের ছাত্র। হাত খরচ চালাতে ইন্সিউরেন্স এজেন্ট হয়েছে। অমিতকেও এই ধরণের কাজ করতে বলেছিল মৌসুমী। কিন্তু অমিত কয়েকবার কাজে ভুল করে কর্তৃপক্ষের কাছে কথা শুনেছে। তারপর থেকে চাকরির চেষ্টা করেনা। একটা দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসে ভেতর থেকে। বাবলুর দেওয়া টাকায় ক্যানভাস এসেছে, দামি দামি রং এসেছে। অমিত কাজ শুরুও করে দিয়েছে। কিন্তু এখনো হাজার পনের টাকা জোগাড় করা বাকি। এরপর কী হবে ওরা দুজনেই জানে না। এই সুযোগটা হাতছাড়া হয়ে গেলে অমিত একেবারে ভেঙে পড়বে। ভবিষ্যৎ যদি জানা যেত তবে সবার আগে অমিতের পরিণতি জানতে চাইত মৌসুমী। টাকা — এইমুহূর্তে টাকা ছাড়া আর কোনো সমাধান নেই। মৌসুমীর বড় অসহায় লাগে। কিজানি কীভাবে অমিত সব জোগাড় করবে!

পায়ে পায়ে সে পৌঁছয় স্টেশনে। মাথাটা ভার হয়ে গেছে হঠাৎ। চোখে ঘোর লেগে আছে। চারটে দশ লোকালের আওয়াজ আসছে কানে। কী যেন বলেছিল শুভেন্দু? মৌসুমীর কিছু হয়ে গেলে পুরো টাকাটাই পাবে অমিত। একটু সময় লাগবে কিন্তু পাবে। বুকের ভেতর একটা ঢেউ খেলে গেল। ট্রেনটা ক্রমশ এগিয়ে আসছে। বিপদের মুখে মৌসুমী কখনো দ্বিতীয় চিন্তা করেনি। যে সমাধান হাতের কাছে পেয়েছে সেটাই বেছে নিয়েছে। সেটা আর্ট কলেজে নুড মডেলিং হোক বা পরিবারে একটা পেট কমাতে অমিতকে বিয়ে করা। এবারেও একটা সম্ভাবনা চোখের সামনে ভাসছে। মৌসুমী দেখে ট্রেনটা এগিয়ে আসছে। মৌসুমীও  ক্রমে এগিয়ে যাচ্ছে লাইনের দিকে। চারটে দশের লোকাল — একটাই সমাধান। টাকা হাতে পেলে অমিত আরো উপকরণ কিনবে, বাড়িটা সারাবে, মায়ের চিকিৎসা করাবে। মৌসুমীর চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। সে আরো এগিয়ে যায়।   হঠাৎ ফোনটা ভাইব্রেট করে ওঠে। হাত লেগে রিসিভ হয়ে গেল কলটা। দূর থেকে কে যেন বলে উঠল, ‘ হ্যালো মৌসুমী হ্যালো? টাকার জোগাড় হয়ে গেছে। আমি দুটো ছবি বিক্রি করেছি। পাঁচ হাজার পেয়েছি। গ্রূপের সুকান্ত বলল ধার দেবে। ওকে আস্তে আস্তে শোধ করে দিলেই হবে। আর কোনো অসুবিধা নেই। আর কোন বাধা নেই। এবার সবকিছু ভালো হবে। হ্যালো মৌসুমী তুমি কোথায়? হ্যালো।’ ফোনটা কেটে গেল।

মৌসুমীর ঘোর কাটে। সে এগিয়ে যায়। চারটে দশের লোকালে বাড়ি ফিরতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published.