ভয় || অনীশ চট্টোপাধ্যায়

ভোরবেলা আচমকা ঘুম ভাঙতেই সুশোভনবাবু টের পেলেন বাঁ হাতের অসহ্য ব্যথাটা। গোটা হাতটা ঝনঝন করছে। উঠে বসলেন। ভাবলেন শোয়ার দোষেই বোধহয় এই হয়রানি। বার দুয়েক হাতটাকে মুষ্টিবদ্ধ অবস্থায় টান টান করে থার্মোমিটারের পারদ ঝাড়ার ভঙ্গীতে ঝাড়লেন। তাতে ব্যথা আরও বাড়ল। কী করা যায়! কী করা যায়! ভাবতে ভাবতে পাশের ঘরে গেলেন। প্রীতির ঘুম ভাঙিয়ে বললেন, “একটু গরম জল করে দাও দিকি।” বউ গজগজ করতে করতে গরম মেজাজে জল ফোটালেন। কিন্তু তাতেও বিশেষ ফল হল না, বরং ব্যথা উত্তরোত্তর বাড়তে লাগল। অভ্যাস মতো সকালের চা হাতে খবর শুনতে টিভি অন করে কাগজটা নিয়ে বসলেন। একই সঙ্গে তিনটে বিষয়ে তাঁর চোখ আর কান আটকে গিয়ে বর্ণমালার ‘ৎ’-এর মতো ঝুলতে লাগল। একঃ অ্যানাদার শকিং রেপ…দুইঃ কিশোরীকে গণধর্ষণ; পুড়িয়ে হত্যা, তিনঃ রেপ…রেপ…রেপ। সুশোভনবাবু প্রথমে টিভি বন্ধ করলেন। তারপর কাগজ মুড়িয়ে পাশে রাখলেন। তারপরেও দেখলেন খাটের এক কোণে তিতলি পুতুলের ঘাড় সোজা করে পোশাক পরাতে পরাতে বলছে, “রেপ…রেপ…রেপ।” সুশোভনবাবুর ভেতরটা কেমন আনচান করে উঠল। শরতকালের হিমেল ভোরেও তিনি ঘেমে উঠলেন। এইবার যেন স্পষ্ট বুঝতে পারলেন ব্যথার উৎসস্থলটা কোথায়। ডান হাত দিয়ে বাঁ হাতের কুনুইয়ের কাছটা চাপতেই ককিয়ে উঠলেন। প্রচণ্ড ব্যথায় চোখের কোণে জল এলে তিতলি পুতুল ফেলে বলল, “বাপ-ই, তুমি কাঁচ্ছ কেন?” তিতলির তার তুলতুলে হাত  দিয়ে মুছে দিল বাবার চোখের জল।

সুশোভনবাবু পেশায় সরকারি কর্মচারী। রোজ ট্রেন-বাস ঠেঙিয়ে আর আধ মাইল হেঁটে অফিসে যান। বেশি বয়সে চাকরি পেয়ে ও ততোধিক বেশি বয়সে বিয়ে করে ঘোরতর সংসারী সুশোভনবাবু মোটের ওপর বেশ সুখিই। অভাব বলতে তেমন কিছু নেই। হ্যাঁ, আক্ষেপ একটা ছিল বটে, বিয়ে করেও অনেকদিন পর্যন্ত ছেলেপুলে না হওয়াতে। যাহোক সে নিয়েও আর আক্ষেপের কোনো কারণ নেই। ক’টা মাত্র ওষুধ খেয়েই সুপ্ত পুরুষত্ব জেগে উঠেছিল। কিন্তু হাতের ব্যথাটা যে বড় কাবু করে তুলছে। নাহ্‌, আজ আর অফিস যেতে পারবেন না। ফোন করলেন ঘোষালকে।

“ঘোষাল? আজ যেতে পারব না ভাই। শরীরটা ভালো নেই। আমার জি.এল.-টা ম্যানেজ করো।” জি.এল. মানে যে ঘাপলা লিভ তা ঘোষাল ভালোই জানেন। এমনটাই চলে। যদি অফিসে একটু সদভাব রাখা যায় তাহলে এমন কত লিভ তৈরি হয়ে যায়। মনে ভাবলেন এই সেদিন একশো দিনের কাজে কেমন ফাঁকি চলে সেই নিয়ে ছবিসহ একটা পোস্ট করেছিলেন। আর আজ নিজেই! যাগগে, অতসত ভাবলে আর আজকালকার দিনে চলে না। বেশি সতীপনা দেখিয়ে কি লাভ? তার চেয়ে একবার বাজারে গিয়ে এক্স রে করিয়ে নিলেই ভালো। বলা যায় না পুরনো চোট হতে পারে। রিস্ক নিয়ে লাভ নেই।

“না, না কাকাবাবু কোন ক্র্যাক নেই। মানে হেয়ার ক্র্যাকও নেই। তবে রিপোর্ট নিতে গেলে কাল হয়ে যাবে। বলুন লাগবে?”

“তুমি যখন বলছ-”

“এই তো আপনি নিজেই দেখুন না।”

তাই তো! সুশোভনবাবু কম্পিউটারের স্ক্রিনে নিজের হাতের সরু লিকলিকে হাড়গুলো খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করলেন। সবই ঠিক মনে হচ্ছে। তবু মনে খটকা লাগল। মনে হল ওই তো হাড় দুটো যেখানে মিশেছে সেখানে কেমন ফ্যাকাসে সাদা আস্তরণ। বললেন, “দরকার কী বাপু তুমি রিপোর্ট তৈরি করেই আন। একটা এক্সপার্টের মতামত তো পাওয়া যাবে।” ওষুধের দোকান থেকে পাঁচটা পেন কিলার কিনে বাড়ি ফিরলেন।

রাতেই অসহ্য যন্ত্রণা থামাতে পেন কিলারের প্রয়োজন হল। পরদিন রিপোর্ট নিয়ে একজন এক্সপার্ট অর্থোপেডিক্সের কাছে গেলেন, “স্যার আমায় বাঁচান। আমি এই যন্ত্রণা সহ্য করতে পারছি না।”

“সে তো বুঝলাম কিন্তু আপনিই দেখুন না কী লেখা আছে রিপোর্টে।”

সুশোভনবাবু স্পষ্ট দেখলেন লেখা আছে, ‘নো বোন ইঞ্জিরি অর অ্যাবনরম্যালিটি ইন দিস ভিউ।’ অস্পষ্টভাবে বললেন, “তাই তো, তাহলে?”

“এই ওষুধগুলো খান। আর আরও ক’টা টেস্ট দিলাম।”

অসন্তুষ্ট মনে বাড়ি ফিরলেন সুশোভনবাবু। মেজাজ আজ বড়ই খিটখিটে। খেতেও রুচি নেই। ছোট্ট মেয়েটা বাপি বাপি করে কেঁদে মরে তবু কোলে নেন না। নিজের হাতের যন্ত্রণায় তিনি বড্ড কাবু হয়ে পড়েছেন। এদিকে ভেবেও পাচ্ছেন না কীভাবে হল এই দুর্গতি!

রাতেই এক অদ্ভুত স্বপ্ন দেখলেন সুশোভনবাবু। একটা ভাঙাচোরা বাস। প্রচণ্ড ভিড়। এবড়ো খেবড়ো রাস্তা দিয়ে চলেছে। প্রবল ভাবে দুললেও কেউ কারুর গায়ে পড়া তো দূরের কথা কারুর সাথে কারুর টাচ পর্যন্ত হচ্ছে না। ঘুম ভাঙতেই মনে হল স্বপ্ন না ফেবিকলের অ্যাড! উফ!

সকাল থেকেই আবার প্রচণ্ড ব্যথা। আর এখন ব্যথাটা কেবল বাঁ হাতের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, ব্যথা ক্রমশ ছড়িয়ে পড়ছে। ডান হাতের তালুতে বাঁ হাতের মতোই ব্যথা, অসহ্য। আরও দুজন এক্সপার্টের পরামর্শ নিলেন কিন্তু কোন সুরাহা হল না। সব টেস্ট করালেন তাতে সব রিপোর্টই ভালো। এই ক’দিন শুধু একই চিন্তা। শরীর ভেঙে পড়েছে। শরীরের সঙ্গে যেন পাল্লা দিয়ে ভেঙে পড়ছে মন। মানসিক স্থিতি হারিয়ে ফেলছেন ক্রমশ। সব্বাইকেই যেন সন্দেহের চোখে দেখেন। এক প্রীতি ছাড়া। প্রীতি ঘরে এলেন ওষুধ নিয়ে, “খেয়ে নাও।” মাথায় স্নেহের হাত রাখলেন। এই সময়টা প্রীতির কোন কাজ থাকে না। কাজের মেয়েটা কাজ সেরে চলে গেছে। স্কুলের বাসও চলে গেছে তিতলিকে নিয়ে। সুশোভনবাবুর মনে হল, প্রীতির এই স্নেহের পরশটাই যেন কতদিন পান নি। একই ছাদের তলায় থেকেও কেমন এলিয়ন এলিয়ন ভাব। মোবাইলের দিকে চোখ রেখেই প্রীতি বললেন, “দেখো, দেখো, কী অবস্থা!” সুশোভনবাবু দেখছেন ফেসবুকের একটা ভিডিও ক্লিপ। মেলার ভিড়ে দাঁড়িয়ে একটা লোক। বয়স তাঁর মতোই হবে। ক্রমশ নিজের কোমরটাকে নোংরা ভঙ্গীতে এগিয়ে দিচ্ছে সামনে দাঁড়ানো বাচ্চা মেয়েটির দিকে। মেয়েটি অস্বস্তিতে তার মাকে কিছু বলল। মা মেয়েকে নিয়ে মেলা ছেড়ে চলে গেল। ব্যাস এইটুকুই, কিন্তু কী ভয়ঙ্কর অশ্লীল মনে হল সুশোভনবাবুর। মুখে বললেন, “ছিঃ! শালা পা’ভার্টেড!”

প্রীতি বললেন, “কী দিনকালই না পড়ল! মেয়েটাকে নিয়ে খুব চিন্তা হয় গো।”

সন্ধ্যের পর ব্যথা ছড়িয়ে পড়ল ডান হাতের কুনুইয়েও। মনে হল হাত দুটো কেটে ফেললেই যেন সব যন্ত্রণার শেষ। আর তিনি পারছেন না। সামনে প্রীতি ব্যস্ত মোবাইলে। তিতলি প্রজাপতি রং করছে মন দিয়ে। সাদা কাগজের মধ্যে কিছু কালো রেখাচিত্রকে ছোট্ট মেয়েটা তার মায়াবী শক্তিতে রাঙিয়ে তুলছে, লাল-নীল-হলুদ-সবুজ। চারিদিকে কেবল রঙের খেলা। তবু সুশোভনবাবুর মনটা কেমন আস্ট্রের ছাইয়ের মতো হয়ে আছে। একটা পেন কিলার খেয়ে শুয়ে পড়লেন তিনি।

আজ আবারও দেখলেন অদ্ভুত স্বপ্নটা। একটা ভাঙাচোরা বাস। প্রচণ্ড ভিড়। এবড়ো খেবড়ো রাস্তা। দেখতে দেখতেই তিনি আবার কখন যেন মেলার মাঝে চলে এসেছেন। ভিড়ে ভর্তি মেলার মাঝে তিনি দাঁড়িয়ে আছেন। নাহ্‌, শুধু দাঁড়িয়ে নেই। একটা বাচ্চা মেয়ের দিকে তাকিয়ে হস্তমৈথুন করে চলেছেন! ঘামে ভিজে চোখ খুললেন। এমনটা চললে পাগল হয়ে যাবেন। একে এই অসহ্য যন্ত্রণা তার ওপর অদ্ভুত সব স্বপ্ন। কাল একবার সুধীরকে ফোন করতে হবে। আজকাল কাউন্সিলিং করে নাম-টাম করেছে।

সব কিছু শুনে সুধীর দাশগুপ্ত বললেন, “দেখ, তোকে তো আমি বহুদিন থেকে চিনি তাতে আমার মনে কোন সন্দেহ নেই। তবুও বলছি কোন পাপবোধ থেকেই হয়তো তোর সুপার ইগো তোকে সচেতন করছে। সাবকন্সাসে নিশ্চয়ই লুকোনো কিছু আছে। তুই বল। বলে দেখ সব ঠিক হয়ে যাবে।”

বন্ধু চিরকাল সুশোভনবাবুকে অন্য চোখে দেখেন। বন্ধু কেন পরিচিত মহলেও তিনি মাথা উঁচু করেই চলেন। কিন্তু সুধীরের এই কথা বা সেদিন ভিডিওটা দেখার পর থেকেই তাঁর কাছে যা স্পষ্ট হল তাতে দু’য়ে দু’য়ে চার হয়ে যায় ঠিকই কিন্তু যোগফলের সরল সমীকরণটাই ভয়ঙ্কর জটিল মনে হল সুশোভনবাবুর কাছে। তিনি বললেন, “তোর কাছে কিছুই লুকবো না কারণ এই শারীরিক আর মানসিক কষ্ট আমি আর সহ্য করতে পারছি না। যেদিন শেষ অফিস গিয়েছিলাম। মানে ঠিক পাঁচদিন আগে… ভিড় বাসে যাচ্ছি। একটা মেয়ে স্কুল ড্রেস পরা, আমার পাশেই দাঁড়িয়ে ছিল। আমার বাঁ হাতের কুনুইটা ওর বুকে ঠেকছে জেনেও হাতটা উপরের রডে রাখিনি। দেখলাম মেয়েটা ব্যাগটা সামনের দিকে নিয়ে কিছুটা গার্ড দেওয়ার চেষ্টা করল, পারল না। আবার নামার সময় আর একটা ঘটনা ঘটল। নামার তাড়ায় যেটা অঘটন সবার চোখে, আমার কাছে সেটা কিন্তু ছিল ইচ্ছাকৃত। আমি যখন নামতে যাব বলে তৈরি হচ্ছি ঠিক তখনই দেখলাম একটি মেয়ে নামবে। পা বাড়িয়ে চট করে পিছিয়ে এলাম অনেকটা ওকে জায়গা ছেড়ে দেওয়ার ভঙ্গীতেই। আর পিছিয়ে যেতেই মেয়েটা এগিয়ে গেল সেদিকে দরজার মাঝখানের রডটা ধরে। ব্রেকের সঙ্গে আমিও পড়ে যাবার ভঙ্গী করে ধরলাম রডটা ঠিক মেয়েটার হাতের তিন বিঘত নীচে। স্পঞ্জের মতো নরম বুকটা ডোলে দিয়ে নেমে গেল আমায়, শরীরে বিদ্যুৎ খেলে গেল। নেমে হাঁটতে লাগলাম যেন কিছুই হয় নি। তবু আদিম ইচ্ছায় ঘাড় ঘুরিয়ে একবার মেয়েটাকে দেখার লোভ সামলাতে পারলাম না। কিন্তু এ কে! বাসে একজন প্যাসেঞ্জারকে দেখে যতটা মনে রাখা যায় ততটা মনে রেখেও আমি নিশ্চিত, এই মেয়ে সে নয়। কাটা দাগে ভর্তি মুখটা দেখে এক ঝলকে অনেকটা ভয় গ্রাস করল আমায়। সামনে ফিরে দ্রুত হাঁটতে লাগলাম ঠিকই, কিন্তু মেয়েটার দুটো চোখকে ভুলতে পারলাম না। মনে হল, নিশ্চয়ই ও বুঝে ফেলেছে আমার মতলব। যেন ওই চোখ প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আজও খুঁজে বেড়াচ্ছে আমায়। ভয় পেয়ে তক্ষুনি প্রতিজ্ঞা করলাম, এমন কাজ জীবনে করব না। মনে মনে মেয়ের মাথায় হাত রাখলাম।”

একটু থামলেন সুশোভনবাবু। খালি করলেন সামনে রাখা স্বচ্ছ কাচের গ্লাস। সুধীর দাশগুপ্ত নিস্পন্দ নিশ্চল, মুখের ওপর দুই বাহু ক্র্যাচের ভঙ্গীতে, টান টান পিঠে তাকিয়ে আছেন অচেনা বন্ধুর দিকে। সুশোভনবাবু আবার শুরু করলেন, “কিন্তু এমনটা এই প্রথম নয়। আগেও করেছি বহুবার। নিষ্পাপ ভঙ্গীতেই করে এসেছি এ কাজ। ছোটবেলায় একবার হাত রেখেছিলাম ঘুমন্ত মাসতুতো বোনের বুকে। আমি এখনও দেখি কাজের মেয়েটা যখন কাপড় কাচে কিমবা ঘর মোছে। যতটা দেখা যায় প্রীতি না থাকলে ততটাই দেখি। কিন্তু এই দেখাতেও কী পাপ?”

“অবশ্যই!” মাত্রাতিরিক্ত জোরের সঙ্গে বললেন সুধীর। ক’টা ওষুধ প্রেস্‌ক্রাইব করতে করতে বললেন, “চিন্তাটাকে এবার বদলা। এগুলো ভয়ঙ্কর অন্যায় সেটা বুঝতে শেখ। যদি নিজের পাপ বুঝতে পারিস তাহলে তুইও পাল্টে যাবি, সমাজটাও পাল্টে যাবে। দেখবি, তোর আর কোনো কষ্টও থাকবে না। আর প্রতিদিনের এই দশটা-পাঁচটার আতঙ্ক নিয়ে মেয়েদের রাস্তায় বেরুতে হবে না। আশা করি এমনটা আর কোনোদিন করবি না। তাহলেই তুই তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠবি। ওষুধগুলো খা। রেস্ট নে। হপ্তাখানেক পরে একবার আয়।”

রাস্তায় নেমে বেশ ঝরঝরে লাগছিল সুশোভনবাবুর, যেন বহুকালের একটা ভার থেকে মুক্ত হলেন। নিজেকে পাল্টানোর শপথটা আরও একবার মনে করে নিলেন। কিন্তু সময় মানুষকে সব ভুলিয়ে দেয়। তা-ই হল।

বেশ কয়েকদিন পর, অফিস থেকে বাড়ি ফিরে প্রীতির মুখ দেখে ঝড়ের আশঙ্কা করলেন তিনি।

“এটা কে?”

সুশোভনবাবু নিজেকে দেখলেন। ফেসবুকের একটা ভিডিও ক্লিপে যে মুখের ওপর লাল রঙের গোল্লাটা ব্লিঙ্ক করছে সেটা তিনি। ভিডিও চালাতেই বুঝলেন, ভিড় বাসে তাঁরই কোন একদিনের কীর্তি কেউ ধরে রেখেছিল মোবাইলে। নীল রঙের প্রিয় জামাটা দেখেই চিনলেন। ডান হাতের তালুতে আবার অসহ্য ব্যথাটা অনুভব করলেন হঠাৎ। কোন কথার জবাব না দিয়ে ঘরে দরজা দিলেন।

আজ আর একা নয়, সুশোভনবাবুর সঙ্গে প্রীতিও চলেছেন ডাক্তার সুধীর দাশগুপ্তের কাছে। একটা সিগন্যালে গাড়ি থামতেই সুশোভনবাবু দৌড় দিলেন আচমকা। অনেকগুলো কালো মাথার ভিড়ে এমনভাবে মিশে গেলেন তিনি যে প্রীতির পক্ষে খোঁজা অসম্ভব।

***

প্রথমে ট্রেন তারপর বাস ঠেঙিয়ে আর আধ মাইল হেঁটে অফিস থেকে ক্লান্ত হয়ে বাড়ি ফেরার সময় সেদিন শুনতে পেলাম মোড়ের চায়ের দোকানের পাশে বসে অন্ধ হাতকাটা পাগলটা বিড়বিড় করে কী সব যেন উপদেশ দিচ্ছে, “ভয় পাও…ভয় পাও… ভয় না পেলে একদিন ভয় পেতেই হবে…হা হা হা…”

 

২ Comments

  1. অপূর্ব লেখা,সমাজ কে সচেতন করতে এই রকম লেখা আরো চাই।

  2. Khub bhalo laglo ❤️❤️❤️❤️

Leave a Reply

Your email address will not be published.